ঢাকা, ২৪শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

গাজীপুরায় ঝুট বাণিজ্য বিএনপির দুই পক্ষ মুখোমুখি, একাধিক ককটেল বিস্ফোরন


প্রকাশিত: ১০:৪৭ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২৫

গাজীপুর প্রতিবেদকঃ

গাজীপুরে বিএনপি নেতার ঝুট বাণিজ্য দখলে দুষ্কৃতকারীদের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২৩মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা মহানগরীর এরশাদনগর গাজীপুরার একটি পোষাক কারখানার সামনে ওই হামলায় নগরীর ৫০নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী হুমায়ুন কবিরের অনুসারীসহ স্থানীয় কাজী নূর মোহাম্মদ সুপার মার্কেটের কয়েকজন আহত হয় বলেও জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, হামলায় আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসা নিতে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় সূত্র আরো জানায়, শুক্রবার সকাল থেকে- বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের একটি পক্ষ দুষ্কৃতকারীদের নিয়ে হালিম মোল্লা ও কিছু বিএনপি নেতার ইন্ধনে স্থানীয় জেরমস ইন্ডাস্ট্রিজের শ্যাটান কারখানার সামনে ককটেল বিস্ফোরন ঘটিয়ে ভিতি সঞ্চার করেন। কারখানার দেয়ালে ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও একাধিক ককটেল বিস্ফোরন ঘটানো হয়।

পরে প্রতিপক্ষরা ঝুট বের করার কাজে বাঁধা দিয়ে হুমকি ধামকি দেয় স্থানীয় কাজী হুমায়ুনের অনুসারীদের। একপর্যায়ে হালিম মোল্লা ও বিএনপির একাংশ আ’লীগের যোগসাজশে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নগরীর ৫০নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের অনুসারীদের উপর চড়াও হয়ে ধাওয়া দেন বলেও স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করে। পরে ওই এলাকার স্থানীয়সহ কয়েকজন আহত হন। একইসময় ওই এলাকায় ভিতি সঞ্চার হলে স্থানীয় নানা সামগ্রীর দোকানপাট বন্ধ করে দেয় ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগরীর গাজীপুরা ৫০নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী হুমায়ুন কবির বলেন, গত ১০আগস্ট থেকে শ্যাটান কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে স্ট্যাম্পে চুক্তি করে নূর এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ঝুট নিচ্ছি আমি। আজ শুক্রবার ঝুট বের হবার তারিখ, ওই সময় প্রতিপক্ষরা টের পেয়ে আ’লীগ, বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের একাংশ-সহ মাদককারবারী এবং সন্ত্রাসীদের যোগসাজশে জোড়পূর্বক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার উপর ও কারখানার সামনে চড়াও হয়ে হামলা চালায়।

তিনি আরো বলেন, কারখানার দেয়ালে ও সড়কে ককটেল বিস্ফোরন ঘটায় প্রতিপক্ষরা। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রের মুখে ঝুট বের করতে না পেরে একটি ভবনে আশ্রয় নিয়ে কিছু সময় অবরুদ্ধও থাকি আমি। পরে পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতী স্বাভাবিক হয়। এ বিষয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলেও জানান বিএনপির স্থানীয় এই নেতা কাজী হুমায়ুন কবির।

অপরদিকে, প্রতিপক্ষ হালিম মোল্লা ও তার আনুগত্য নেতাদের অনুসারীদের একাংশ নামপরিচয় গোপন রেখে জানান, পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের দোষরদের একাংশ নিয়ে বিএনপির একাংশ ওই কারখানা দখল করে বাণিজ্য করছে যা কখনই হতে দিবেন না বলেও জানান তারা। তাদের দাবি ওই প্রতিষ্ঠানের সামনে গেলে প্রতিপক্ষরা তাদের উপর চড়াও হয়ে হামলা চালায়, ককটেল বিস্ফোরন ঘটায়। তবে এ বিষয়ে জানতে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক হালিম মোল্লার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে তাঁর মুঠো ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার মুঠোফোনের শেষ তিন সংখ্যা ৫৫৫ এ সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব না হওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, স্বেচ্ছাসেবক দল ও বিএনপির সহযোগী সংগঠনের কিছু লোক, ৫০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের বাণিজ্য দখলে ককটেল বিস্ফোরন ঘটায়। তিনি জানান, হালিম মোল্লাসহ কয়েকজনের বিষয়ে তথ্য পেয়েছি অভিযোগ তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ওসি।