ঢাকা, ২৪শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

গাজীপুরে মোঘর খাল খনন ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম শুরু


প্রকাশিত: ১১:০৩ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার:

গাজীপুরের নগরবাসীর জলাবদ্ধতার দূর্ভোগ লাঘবের লক্ষে গাজীপুর মহানগরীর দীর্ঘতম ও প্রাচীন মোঘরখাল পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করেছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন। সেনাবাহিনীর সহায়তায় খালটির সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, খনন ও পরিস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৩ মে) সকাল থেকে খালটির উৎস মূখ গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস এলাকা থেকে এই কার্যক্রম শুরু করা হয়। এই কার্যক্রম শুরুর সময় উপস্থিত ছিলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোঃ সোহেল রানা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল) সুদীপ বসাক, নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রাসেল, প্রকৌশলী মো: আমজাত হোসেনসহ সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র ও পরিবেশবাদীরা জানান, গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া এলাকা থেকে শুরু হয়ে মোঘর খালটি পূর্ব চান্দনা, খাইলকুর, হায়দারাবাদ প্রভৃতি এলাকা অতিক্রম করে হায়দারাবাদ খালে মিলিত হয়। পরে এটি নিমতলী খাল হয়ে টঙ্গী নদীতে পতিত হয়। র্যা নেলের ম্যাপে এটি গাছা খাল হিসাবে উল্লেখ পাওয়া যায়। মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার জলবদ্ধতা নিরসনে এই খালটি রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এটি সবচেয়ে বেশী অবৈধ দখল ও দূষণের শিকার। বিভিন্ন কলকারখানার রাসায়নিক বর্জ্য, অবৈধ দখল এ খালটি তার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছিল। এ কারণে স্থানীয় এবং ঢাকার বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, খালপাড়ের মানুষ এই খালটির সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও খননের দাবি জানিয়ে আসছিল।

এমনি দাবির প্রেক্ষিতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় খালটির সীমানা নির্ধারণ করে অবৈধ দখল উচ্ছেদ খনন ও ময়লা অপসারণ এর কাজ শুরু করেছে। খালের অপসারিত মাটি ও অন্যান্য বর্জ্য খালের পাশে না ফেলে ট্রাক দিয়ে সরাসরি ডাম্পিং পয়েন্টে নিয়ে ফেলা হচ্ছে। বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ মনির হোসেন বলেন, মোঘর খালটি গাজীপুর সিটি এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিল। কিন্তু বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের রাসায়নিক বর্জ্য, অবৈধ দখল ইত্যাদি কারণে এই খালটি মৃত প্রায় অবস্থায় চলে যায়। এসব কারণে বেলা, রিভার ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজল দলসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন এটি সীমানা নির্ধারণ করে খনন এবং পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল। বর্তমানে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এই খালটি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণ করায় আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই।

তিনি আরো বলেন, এই কার্যক্রমকে টেকসই করার জন্য খালটির স্থায়ীভাবে সীমানান নির্ধারণ করা খুবই প্রয়োজন। ভবিষ্যতে যাতে আবার কোন অবৈধ দখল না হয় এবং কেমিক্যাল বর্জ্যে যাতে খালটি যাতে আর দখল পরতে না পারে তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী।

এ বিষয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সরফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, নাগরিক সুবিধার জন্য জলাবদ্ধতা নিদর্শন ও পরিবেশ রক্ষায় আমরা এই খালটির সীমানা নির্ধারণ করে অবৈধ দখল উচ্ছেদ, খনন ও পরিষ্কারের কাজ শুরু করেছি। আশা করা যায়, এ কাজটি সম্পন্ন হলে এই খালের আশেপাশের মানুষের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা ও নানা রকম দূষণের কারণে সৃষ্ট দুর্ভোগ লাগব হবে। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।