ঢাকা, ৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৪ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

১২ তলা থেকে মাটিতে পড়েও স্বামীকে বললেন, ‘আমি এখনো মরিনি!


প্রকাশিত: ১১:২৯ অপরাহ্ণ, মে ২৪, ২০২৫

চীনে ৪৪ বছর বয়সী এক নারী ১২ তলা থেকে নিচে পড়েও অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন। মাটিতে পড়ে যাওয়ার পরও তিনি তার স্বামীর কাছে সাহায্য চেয়ে বলতে পেরেছিলেন, ‘আমি এখনো মরিনি, ১২০-এ ফোন করো!’

ঘটনাটি ঘটে গত ১৩ মে চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জিয়াংসির লেপিং শহরে। এক গ্রাহকের বারান্দায় জানালা লাগাতে গিয়ে পেং দুর্ঘটনার শিকার হন। এ ঘটনায় দেশব্যাপী নেটিজেনরা অবিশ্বাস এবং বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

পেং হুইফাং একটি কারখানার পরিচ্ছন্নতাকর্মী। পেংয়ের স্বামী জানালার ব্যবসা করেন। গত ১৩ মে স্বামীর কাছ থেকে ফোন পেয়ে তাকে সহায়তা করতে গিয়েছিলেন পেং। এই দম্পতি মাটি থেকে ১২ তলায় কয়েক শ কিলোগ্রাম ওজনের একটি ভারী জানালা তুলতে একটি ক্রেন ব্যবহার করছিলেন।

জানালাটি ওপরে তোলার সময় একপর্যায়ে একটি গাছের ডালের সঙ্গে আটকে যায়। পেং ওই যন্ত্রের সঙ্গে সংযুক্ত রিমোট কন্ট্রোল ধরে ছিলেন। জানালার সঙ্গে টান খেয়ে পেং নিচে পড়ে যান। ঘটনার সময় তিনি সুরক্ষা দড়ি পরে ছিলেন না, এই সিদ্ধান্তের ফলে তার জীবন শেষ হতে গিয়ে বেঁচে যায়।

পেং বলেন, ‘আমি শুধু ভাবছিলাম এখন মারা যাচ্ছি, এই পৃথিবী থেকে চিরদিনের জন্য চলে যাচ্ছি।’ কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে, তিনি বেঁচে যান। তার পড়ে যাওয়ার গতিটিকে থামিয়ে দিয়েছিল ভবনের নিচে একটি ছাউনি। তিনি সাদা ছাউনিটি ছিঁড়ে নিচে পড়ে যান। তবে ডান পা, বাঁ পা এবং পিঠের নিচের অংশের ফ্র্যাকচারসহ শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাত পান।

পেং জানান, তিনি কোনো ব্যথা অনুভব করেননি তখন, কিন্তু নড়তে পারছিলেন না। তবে শুয়ে থেকেই তিনি স্বামীর উদ্দেশে চিৎকার করে বলেন, ‘আমি এখনো মরিনি, ১২০-এ ফোন করো!’

ঘটনার পর পেংকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে তার ফ্র্যাকচারসহ একাধিক আঘাতের চিকিৎসার জন্য অস্ত্রোপচার করা হয়। তার শরীরের ওপরের অংশটি প্রায় অক্ষতই ছিল। বর্তমানে তিনি আরো একটি অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায় রয়েছেন। চিকিৎসকরা আশাবাদী, ছয় মাসের মধ্যে তিনি আবার হাঁটতে পারবেন।

পেং নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ না করার জন্য গভীর অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন। তিনি অন্যদের সতর্ক করতে নিজের গল্প শেয়ার করছেন। তিনি আরো জানান, ক্লায়েন্টের বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই এবং ক্ষতিপূরণও দাবি করবেন না। তার ভাষায়, ‘এই দুর্ঘটনা আমাদেরই দায়িত্বে হয়েছে। ক্লায়েন্টের কোনো দোষ নেই। বরং আমরা তাদের অসুবিধায় ফেলেছি বলে লজ্জিত।’

এখন পর্যন্ত চিকিৎসার পেছনে তাদের ৭০ হাজার ইউয়ান (প্রায় ১০ হাজার মার্কিন ডলার) খরচ হয়েছে। পেং জানিয়েছেন, ভবিষ্যতের চিকিৎসা ব্যয়ই এখন তাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সাহায্যের জন্য তারা তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।